Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

বর্ষাকালে মাছ চাষে করণীয়

বর্ষাকালে মাছ চাষে করণীয়
মোঃ লতিফুর রহমান সুজান
বর্ষাকালে নদী খাল বিল থই থই থাকে পানিতে। মাছ চাষের জলাশয় বা পুকুর থাকে পানিতে পরিপূর্ণ। মাছের  প্রাকৃতিক আধার হিসেবে বিল ও ছড়া জাতীয় জলাশয়গুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে। বর্ষা মৌসুমে প্লাবনভূমিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রজনন করে তাদের বংশধারা বজায় রাখে এবং নার্সারি ও বিচরণক্ষেত্র হিসেবে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। আবার বর্ষা মৌসুমে বিলের নিকটবর্তী ফসলের জমিগুলো যখন পানির নিচে প্লাবিত হয়, তখন অধিকাংশ স্থানেই এগুলো হয়ে যায় অব্যবহৃত সম্পদ। সামান্য কিছু সংস্কারের মাধ্যমে এসব মাঠের বর্ষার পানিকে নিয়ন্ত্রণ করে মাছচাষ করা সম্ভব। প্লাবনভূমির একই মাঠে অনেক    কৃষকের ফসলের জমি থাকে বিধায় এখানে প্রয়োজন সবার সম্মতি, ঐক্যবদ্ধতা। প্লাবনভূমিতে সমাজভিত্তিক মাছ চাষ কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণ যে শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবেই লাভবান হয় তা নয়, বরং এলাকাজুড়ে ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তনও হয়।
জলাশয়ে ব্রুড মাছ বা মা মাছ মজুদ করা এবং মাছ বড় হওয়ার এখন উৎকৃষ্ট সময়, তাই মাছচাষি সঠিকভাবে এই কাজটি করতে পারেন। আমাদের দেশে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণ মাছ চাষ হয়ে থাকে। তবে মাছচাষে ঋতুভেদে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। তা না হলে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় এবং মাছ চাষে লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। তাই মাছ চাষের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হয়। বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষে সতর্কতা
বৃষ্টির পানি কিছুটা অম্লীয়, তাই পুকুরে পানির পিএইচ মান কমে যেতে পারে। সেজন্য বৃষ্টির পর পানির পিএইচ পরীক্ষা করে প্রয়োজনমতো পাথুরে চুন পরিমাণমতো পানিতে গুলে ঠা-া করে প্রয়োগ করতে হবে।
বৃষ্টির পানি কিছুটা ঠা-া হওয়ায় অতি বৃষ্টিতে পুকুরে পানির তাপমাত্রা এবং পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। যদি কোন কারণে পুকুরে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয় তবে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে। পুকুরে অক্সিজেন স্বল্পতা দূর করার জন্য প্যাডেল হুইল এরেটর, ডাবল স্পিড এরেটর, পুশ ওয়েব এরেটর, কুলিং এরেটর ইত্যাদি, যা পুকুরে স্থাপন করে কার্যকরভাবে এই সমস্যা দূর করা যায়। কৃত্রিম অক্সিজেন সরবরাহে জিওলাইট বালুর সাথে মিশিয়ে পুকুরের সর্বত্র প্রয়োগ করে অক্সিজেন স্বল্পতার সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষের পুকুরগুলো বৃষ্টির পানিতে ভরে যেতে পারে। তাই মাছ চাষের পুকুর থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। পানি ঢুকানোর পথের ছাঁকনিটি দু’স্তর বিশিষ্ট হতে হবে। এর প্রথমটির ফাঁস ১.৫ মিমি এবং দ্বিতীয়টির ফাঁস ০.৫ মিমি। পানি বের হবার পথে একটি ছাকনি থাকলেই চলে। এ জালের ফাঁস হবে ১.৫ মিমি। ছাঁকনির বাইরে একটি নিরাপত্তা বানার ব্যবস্থা রাখলে মূল ছাঁকনিটির কার্যক্ষমতা বাড়বে। প্রয়োজন অনুযায়ী পানি বদল করার সুবিধা কাজে লাগানো যায়।
পুকুরের পানি নিয়মিত পরীক্ষা ও খেয়াল রাখতে হবে। মাছ চাষের জন্য তাপমাত্রা ২৮-৩১ ডিগ্রি সে., দ্রবীভূত অক্সিজেন কমপক্ষে ৫ পিপিএম বা মিলিগ্রাম/লিটার, কার্বন ডাই-অক্সাইড ১২ মিলিগ্রাম/লিটার এর নিচে, এমোনিয়া ০.০২৫ মিলিগ্রাম/লিটার এর নিচে, পিএইচ ৭.৫-৮.৫, ক্ষারত্ব ৪০-২০০ মিলিগ্রাম/লিটার, ঘোলাত্ব ২০০০০ মিলিগ্রাম/লিটার এর নিচে, স্বচ্ছতা ২৫-৩০ সেন্টিমিটার।
পুকুরে নিয়মিত ও নির্দিষ্ট জায়গায় খাদ্য দিতে হবে। তবে বৃষ্টির দিনে মাছ চাষের পুকুরে সার ও খাদ্য দেয়া বন্ধ রাখতে হবে।
সাধারণত বর্ষা মৌসুমে মাছের রোগবালাই তুলনামূলক কম হয়। মাছ চাষে প্রতি মাসে প্রতি শতকে ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি হারে (পানির পিএইচ পরীক্ষা করে) পাথুরে চুন পরিমানমত পানিতে গুলে ঠা-া করে প্রয়োগ করতে হবে।
চুন প্রয়োগ করলে মাটি ও পানির অম্লতা প্রশমিত করে; সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি; ক্ষতিকর গ্যাস ও রোগজীবাণু দূর করে; চুনের ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান; প্লাঙ্কটন বৃদ্ধির জন্য কাদায় আবদ্ধ ফসফরাস মুক্ত করে; পানির ঘোলাত্ব দূর হয়।
মাছচাষের পুকুরে পরিমাণমতো চুন পানিতে গুলে ঠা-া করে পুকুরের সর্বত্র ছিটিয়ে দিতে হবে। মাটি ও পানির পিএইচ পরিমাপ করে সাধারণ প্রয়োগমাত্রা ০.৫-১ কেজি/শতক হারে চুনের পাশাপাশি জিওলাইট ব্যবহার করতে হবে।
বর্ষার ভরা মৌসুমে অবিরাম বৃষ্টি বা আকস্মিক বন্যার পানিতে পাড় ডুবে মাছ ভেসে যেতে পারে। আবার বৃষ্টির সময় পুকুরে যাতে বাইরের ময়লা পানি গড়িয়ে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ সময় পুকুরের পাড় উঁচু করে দিতে হবে। পুকুর পাড় এমনভাবে বাঁধতে হবে যাতে পানি বৃদ্ধির কারণে পুকুর থেকে কোন মাছ বের হয়ে যেতে না পারে।
অতি বৃষ্টিতে/বন্যার সময় পুকুরে মাছ আটকানোর জন্য পুকুর পাড়ের চারদিকে মশারির নেট বা জাল, বাঁশের বানা দিয়ে ঘের/বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পুকুরের কোণায় ও মাঝখানে ঝোপঝাড় দিয়ে মাছের আশ্রয়স্থল বানাতে হবে। মাছ দ্রুত আকৃষ্ট হয় এমন খাবার যেমন সরিষার খৈল, চিটাগুড় পুকুরে দুই বা তিন স্থানে দিয়ে রাখা যেতে পারে।
পুকুর পাড়ে/পুকুরের কাছাকাছি বড় গাছ থাকলে গাছের কা- কেটে ফেলতে হবে। পুকুরে ডাল বা পাতা পড়া উচিত নয়।
বর্ষায় ডুবে যাওয়া পুকুর বা জলাশয়ে বর্ষা পরবর্তী পোনার চাহিদা মেটানোর জন্য খাঁচায় পোনা মজুদ করা যেতে পারে।
মাছ চাষে লাভবান হওয়ার জন্য পুরো বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে হয়। মাছ চাষের ক্ষেত্রে সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। মাছ চাষের যে কোনো পরামর্শের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা ১৬১২৬ এই নম্বরে যে কোনো মোবাইল অপারেটর থেকে কল করে অথবা মৎস্য পরামর্শ সংক্রান্ত মোবাইল অ্যাপ ‘উৎ. ঋরংয (মাছের ডাক্তার)’ থেকে মৎস্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

লেখক :  সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার, গাজীপুর সদর। মোবাইল : ০১৭৬৫১১১৪৪৪, ই-মেইল :suzan.dof@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon